অভিনব কায়দায় ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখার ভল্ট থেকে তিন কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শনিবার শাখাটির ক্যাশ ইনচার্জ রিফাতুল হক ও অপারেশন ম্যানেজার এমরান আহম্মেদের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতিকুল আলম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
গত ১৭ জুন ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখার ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক এ ঘটনায় বংশাল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। একইসঙ্গে অভিযুক্তদের থানায় সোপর্দ করা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর দুদক এ মামলা করে।
এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখার ভল্টে রক্ষিত তিন কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন, যা দণ্ডবিধি ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ঘটনার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি রিফাতুল হক ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে বংশাল শাখার ক্যাশ ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের ইন্টারনাল অডিট অ্যান্ড ইন্সপেকশন ইউনিট গত ১৭ জুন বার্ষিক নিরীক্ষার অংশ হিসেবে শাখাটিতে পরিদর্শনে যায়। তাৎক্ষণিক পরিদর্শনে ভল্টে ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার ঘাটতি পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ক্যাশ ইনচার্জকে জিজ্ঞেস করলে প্রাথমিকভাবে তিনি টাকা সরানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি জানান, গত বছরের ২০ জুন থেকে গত ১৬ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে এ পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অভিনভ কৌশলে টাকা আত্মসাৎ করেন তারা:
অভিনব কৌশলে এ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। এক্ষেত্রে ১০০ টাকার নোটের ১০ বান্ডিলের দু’পাশে ৫০০ টাকার নোট দেওয়া হয়। একইভাবে ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিলের দু’পাশে ১০০০ টাকার নোট দিয়ে রাখা হয়। যেন দেখে মনে হয় সবই ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের বান্ডিল। এভাবে যে পরিমাণ অর্থ রয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি দেখিয়ে সেখান থেকে আত্মসাৎ করা হয়।
ক্যাশ ভল্টের দু’সেট চাবির এক সেট থাকত রিফাতুল হকের কাছে। অপর সেট চাবি এমরান আহম্মেদের কাছে রক্ষিত থাকত। নিয়ম অনুযায়ী, দিন শেষে প্রতিদিনই ক্যাশ ইনচার্জের কাছ থেকে অপারেশন ম্যানেজার এমরান আহম্মেদের প্রতিদিনের ক্যাশ হিসাব সংরক্ষণ ও মিলিয়ে নেওয়ার কথা। কিন্তু তিনি তা না করে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
জানতে চাইলে ঢাকা ব্যাংকের এমডি এমরানুল হক সমকালকে বলেন, ঘটনাটি দুদক ও পুলিশ তদন্ত করছে। ব্যাংক থেকেও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব তদন্ত শেষ হলে আরও কেউ জড়িত কি-না, তা জানা যাবে
Leave a Reply