ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের বয়স ৪৭ নয় ৩৫ বছর
- আপডেট সময় : ১১:১২:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩
- / ১৮৪৬ বার পড়া হয়েছে
মুক্ত সংবাদ ডেস্ক:
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানকে। এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে মঙ্গলবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর।
এদিকে, রাত থেকে ‘ছাত্রদলের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবালের বয়স ৪৭’ শীর্ষক দাবিতে একটি স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া সেই স্ট্যাটাসে যা আছে
ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির বয়স নিয়ে যে স্ট্যাটাসটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে তা হলো- “ছাত্রদলের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল। রাশেদের বর্তমান বয়স মাত্র ৪৭ বছর, রাশেদের বড় ছেলে তাওহীদ- ওর বয়স ২৭ বছর! আবার তাওহীদও একজন পিতা, তার ৮ বছর বয়সী একটা মেয়ে সন্তান রয়েছে। এর মানে হলো ৮ বছরের একটা বাচ্চার দাদা এখন ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি! অতএব- ছাত্রদলকে এখন আর চাচ্চুদল নয়, বলতে হবে দাদাদল! তথ্যসূত্রঃ- সাংবাদিক Fazlul Bari ভাই।”
প্রবাসী সাংবাদিকের ফেসবুক থেকে প্রথম স্ট্যাটাস
মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩২ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী সর্বপ্রথম এই স্ট্যাটাসটি তার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করেন। মূলত এরপরই সেটি ভাইরাল হয়েছে। এরপর তিনি রাশেদ ইকবালকে নিয়ে আরও কয়েকটি স্ট্যাটাস দেন।
সর্বশেষ স্ট্যাটাসে যা ছিল
১১টা ০৬ মিনিটে সর্বশেষ এডিট করা স্ট্যাটাসে সাংবাদিক ফজলুল বারী লিখেন, “ছাত্রদলের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল দাদা ভাই সবার দোয়া প্রার্থী। যাতে তার পরিবারকে নিয়ে কেউ ট্রল না করেন। দুষ্টু ছেলেরা বলছেন রাশেদের বর্তমান বয়স নাকি—। তার বড় ছেলে তাওহীদও নাকি সন্তানের পিতা! এরমানে একজন দাদা এখন ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি! রাশেদের উচিত হবে এর জবাব দিতে তার পরিবারের সবার এনআইডির তথ্য প্রকাশ করা।”
জাতীয় পরিচয় পত্র ও শিক্ষাগত যোগ্যতায় বয়স কত? রাশেদ ইকবাল খানের জাতীয় পরিচয় পত্র ও শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, তার জন্ম ১৯৮৭ সালের পহেলা ডিসেম্বর। সেখানে তার জন্মস্থান নরসিংদীর শিবপুর দেওয়া আছে। ২০১০ সালের ৮ মার্চ এই জাতীয় পরিচয় পত্রটি দেওয়া হয়েছিল।
২০০৩ সালে তিনি শিবপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন।
এদিকে, তার উচ্চমাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ছিল ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ। সেখান থেকে তিনি ২০০৫ সালে এইচএসসি পাস করেন। ওই কলেজের প্রসংশাপত্রেও রাশেদ ইকবাল খানের জন্ম ১৯৮৭ সালের পহেলা ডিসেম্বর দেওয়া আছে। সে হিসেবে রাশেদ ইকবাল খানের বয়স আগামী ডিসেম্বর ১ তারিখ ৩৬ বছর পূর্ণ হবে। অর্থাৎ, তার বয়স নিয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া তথ্যটি সঠিক নয়।
এ বিষয়টি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারীর লেখা পোস্টে কমেন্ট করে বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন জবাব দেননি। এবং বর্তমানে ফজলুল বারীর আইডিতে রাশেদ ইকবালকে নিয়ে লেখা স্ট্যাটাসগুলো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।
পারিবারিক সূত্র কি বলে?
রাশেদ ইকবাল খানের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,সে এখনো বিয়ে করেননি।২৭ বছর বয়সী তাওহিদ নামের যাকে তার বড় ছেলে বলা হচ্ছে মূলত সে তার আপন ছোট খালার ছেলে।তাওহিদের পিতার নাম বাবুল মিয়া,তারা গাজিপুরে থাকেন।তার পরিবারের লোকজন আরও বলেন,একটি মুসলিম রাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফয়দা লুটার জন্য কিভাবে আপন খালাতো ভাইকে সন্তান বলে অপপ্রচার চালাতে পারে!আমরা এসব মিথ্যা ও বানোয়াট গুজবের তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।
রাশেদ ইকবাল খানের প্রতিক্রিয়া
ছাত্রদলের নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবালের সঙ্গে দেশের কয়েকটি গণমাধ্যম যোগাযোগ করে। এসময় তিনি জানান, ছাত্রদল দেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন। তাই এ সংগঠনের কর্মীদের নিয়ে অপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা অতীতে ছিল এবং এখনও আছে।
“আমি ২০০৬-০৭ সেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। এর আগে একবছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। পরে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছি। তার আগে ২০০৫ সালে এইচএসসি ও ২০০৩ সালে এসএসসি সম্পন্ন করেছি। তাহলে আমার বয়স ৪৭ হবে কিভাবে?”
রাশেদ ইকবাল খান বলেন, দেশের রাজনীতিতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের অভাব রয়েছে। আছে কাদা ছোড়াছুড়ি। আমার বয়স নিয়ে অপপ্রচার করা তারই একটি অংশ।
জানা গেছে, ২০০৬-০৭ সেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে স্নাতকে ভর্তি হওয়ার পর ২০১২ সালে স্নাতক ও ২০১৩ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন রাশেদ ইকবাল খান। ছিলেন শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি রাজধানীর বাংলাদেশ ল কলেজে আইন বিষয়ে স্নাতকে (ডিগ্রি) পড়ছেন।