বাগানের দামী ফুল নয় পথের ধারে অযত্নে বেড়ে উঠা জঙ্গলি ফুলই এই বাংলাকে করেছে রুপসী বাংলা।
বলছিলাম ভাঁটফুলের কথা।
ভাঁটফুল এখন নয়নাভিরাম সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে দেশের বিভিন্ন গ্রামে। ভাঁটফুলের সুবাস ও সৌন্দর্য আমাদের মাতিয়ে রাখে। এটি গ্রামবাংলার অতিপরিচিত একটি বুনো ফুল।
গাঁয়ের মেঠোপথের দুই ধারে থোকায় থোকায় ফুটে আছে ভাঁটফুল। অনেকটা নীরবেই বিলিয়ে যাচ্ছে সৌন্দর্য। স্নিগ্ধ শোভার সুরভিত ভাঁটফুলের রূপসুধায় আকৃষ্ট হয়ে আসছে অনেক পাখি ও পতঙ্গ। ভাঁটফুলের নয়নাভিরাম শুভ্রতায় পুলকিত হয়ে উঠছে প্রকৃতিপ্রেমীদের মন।
দিনের রুপবতী ভাঁটফুল গন্ধ ছড়ায় রাতে,বাতাসে ভেসে বেড়ানো সে গন্ধ পথচারী ও গ্রামবাসীকে মোহিত করে।
ভাঁটফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে জীবনানন্দ দাশ তাঁর ‘রূপসী বাংলা’ কবিতায় লিখেছেন—
‘ভাঁট আঁশ শ্যাওড়ার বন/বাতাসে কী কথা কয় বুঝি নাকো/বুঝি নাকো চিল কেন কাঁদে/পৃথিবীর কোনো পথে দেখি নাই আমি/হায়, এমন বিজন।’
ভাঁট গাছের প্রধান কাণ্ড সোজাভাবে দন্ডায়মান, সাধারণত ২ থেকে ৪ মিটার লম্বা হয়। পাতা ৪ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়। দেখতে কিছুটা পানপাতার আকৃতির ও খসখসে। ডালের শীর্ষে পুষ্পদণ্ডে ফুল ফোটে। পাপড়ির রং সাদা এবং এতে বেগুনি রঙের মিশেল আছে। বসন্ত থেকে গ্রীষ্ম অবধি ফুল ফোটে। এই ফুলের রয়েছে মিষ্টি সৌরভ। ফুল ফোটার পর মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহ করে। গ্রামের মেঠো পথের ধারে, পতিত জমির কাছে এরা জন্মে থাকে এবং কোনরূপ যত্ন ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। এছাড়াও পাহাড়ি বনের চূড়ায় এবং পাহাড়ি ছড়ার পাশে এদের উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষনীয়।
অঞ্চলভেদে এই বুনো ফুলটি ভাটঁফুল,ঘেটুফুল ও বনজুঁই নামে পরিচিত।
--ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব খান, কবি ও লেখক