পার্বতীপুর থেকে মোঃ মোক্তারুজ্জামান মোক্তার: সখের আর এক নাম মিনি চিড়িয়াখানা। এমন ভাবনায় কথা নিয়ে আসে ইঞ্জিনিয়ার রইচ উদ্দীন বাবলু। এটি পার্বতীপুর উপজেলা থেকে দক্ষিণ -পশ্চিম দিকে প্রায় ১০ কি.মি. দুরে ঘোর পল্লীতে অবস্থিত। পার্বতীপুর উপজেলার হাবড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের উত্তর মরলাই গ্রামের মৃত আবু তালেবের পুত্র ইন্জিনিয়ার রইচউদ্দীন বাবলুর ভাবনায় আজকের দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানা ও পার্কটির জন্ম। শুরুতেই এটি নাম ছিল আবু তাহের মিয়া এগ্রো ফার্ম। কয়েকটি মরুভূমির প্রাণী দুম্বা ও বিদেশি ছাগলের খামার আবু তাহের মিঞা এগ্রো ফার্ম নামে দু'বছর আগে যাত্রা শুরু করেন। আর তখন থেকেই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তোলে বর্তমানে এখন এটি দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানা ও পার্ক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আর এটি দেখতে গ্রামীণ পল্লীর নির্মল পরিবেশে প্রতিদিন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ আসতে শুরু করছে। পার্বতীপুর উপজেলার পল্লীতে পারিবারিকভাবে গড়ে উঠা দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানা ও পার্কটিতে এখন ভীড় করছে অসংখ্য মানুষ। এখানে রয়েছে মরুভূমির প্রাণী দুম্বা, চিত্রা হরিণ, কচ্ছপ, ইমু পাখি, ময়ূর, তিন পা ওয়ালা শাহীওয়াল গরু, জার্মান স্পিস কুকুর, বানর, অস্ট্রেলিয়ান ঘুঘু, চীনা হাঁস, ককটেল পাখি, বিদেশি কুকুর, ব্রাহমা মোরগ, বিলেতী ইদুঁরসহ নানা প্রজাতির পশু-পাখি। দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানাটি অল্পদিনেই সবার দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বেশি ভিড় হলেও প্রতিদিনেই দর্শনার্থীরা আসছে বলে জানান স্হানীয়রা । এ মিনি চিড়িয়াখানাটিকে সিসি ক্যামেরার আওতাভূক্তর কথাও জানান কতৃপক্ষ। এটি আধুনিকতার ছোঁয়ায় মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে আদ্ধ। এখানে মেঠো পথ ধরে প্রতিদিন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মানুষ আসছে। শিশুরাও বিনোদনের আখড়া হিসেবে মেতে উঠছে। এদের খেলাধুলার জন্য চরকি, দোলনা আরও হরেক কিছুর ব্যবস্থা রয়েছে।একা কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে নিশ্চিতে এখানে ঘুরে আসা যায়। চিড়িয়াখানার ভিতরেই রয়েছে পিকনিক স্পটও। আছে ক্যাফ পাওয়া যায় চটপটি, কপি, লুডুসসহ গ্রামীন বিভিন্ন পদের খাবার। এখানে ঘুরতে আসতে পারেন দিনাজপুর থেকে ৩২ কিলোমিটার, পার্বতীপুর থেকে ১০ কি.মি ও ফুলবাড়ী থেকে ২০ কি.মি। ২০২৪ সালের মার্চ মাসের শুরুর দিকে প্রায় দুই একর জায়গা নিয়ে এই চিড়িয়াখানাটির বর্তমান অবয়ব। শখের বশে গড়ে তোলা চিড়িয়াখানার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরাও। এমন একজন দর্শনার্থী পার্বতীপুর ডিগ্রি কলেজের ছাত্র আরিফ জানান,পল্লীতে এমন মনোরম নির্জন পরিবেশে বন্ধুদের নিয়ে ছুটে এসেছি। এখানে ঘুরে ঘুরে চিত্রা হরিণ, ময়ূর, কচ্ছপ, ইমু পাখিসহ সব পশু-পাখি দেখেছি এবং বেশ ভালো লাগছে।
৫র্ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মরিয়ম জানান, কচ্ছপ, চিত্র হরিণ, দুম্বা আর ময়ূর বইয়ে ছবি দেখছি কিন্তু আজ এখানে চোখে দেখছি। ফুলবাড়ি এলাকার থেকে আসা হামিদ জানান পল্লীর গ্রামীণ পরিবেশে এমন একটি সুন্দর পার্বতীপুর প্রত্যন্ত পল্লীতে মিনি চিড়িয়াখানা দেখতে পেরে আমি আনন্দিত। ভবিষ্যতে বন্ধু-বান্ধর ও আত্মীয় স্বজন নিয়ে পিকনিক করতে এ পার্কে আসার কথা জানান ।এখানকার পরিবেশও খুব ভালো। উত্তর মরনাই স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারও আনন্দ কথা জানান । তারা বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগের মিনি চিড়িয়াখানা ও পার্কটি দেখতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ প্রতিদিনেই আসছে।
দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানার কর্মীরা বলেন,আমরা বর্তমানে ৫-৬ জন কাজ করছি। আগের চেয়ে এখন অনেক কিছুই দেখার আছে। চলতি বছর মার্চে এই জায়গাতে দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানা ও পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে।
দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানা ও পার্ক উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. রইচউদ্দিন মিঞা বাবলু জানান, তুর্কি দুম্বার ও বিদেশি ছাগলের খামার থেকে মিনি চিড়িয়াখানা ও পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এ বিষয়ে ঐ এলাকার স্হানীয় মেম্বার মোঃ মতিনাল বলেন, আমার ৮ নং ওয়ার্ডেই মিনি চিড়িয়াখানাটি গড়ে উঠছে। আমি মনে করছি, এটি এলাকাবাসী তথা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আনন্দ উপভোগ করার একটি সুন্দর বিনোদন স্পর্ট হবে। ডিজিটাল সময়ের নিরিবিলি পল্লীর নির্মল নির্জণ সমাহার আনন্দদয়ক স্থান হিসাবে গড়ে উঠার প্রত্যয়ের কথা জানান।