পার্বতীপুর থেকে মোঃ মোক্তারুজ্জামান মোক্তার: পার্বতীপুর রেলওয়ে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানাটি জনবল সংকটের মধ্যে দিয়েই নির্ধারিত কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। জানা গেছে, পার্বতীপুর রেলওয়ে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানাটি ১৯৯২ সালের ১৪ মে থেকে কার্যক্রম শুরু করে ২৩৬ জন, জনবল নিয়ে। এটি পার্বতীপুর উপজেলার রেলওয়ে জং
শনের অদুরে উত্তর দিকে পার্বতীপুর- সৈয়দপুর মহাসড়কের সংলগ্ন অবস্হিত। কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (সংক্ষেপে)কেলোকা বাংলাদেশের একটি লোকোমোটিভ কারখানা যেখানে বাংলাদেশের মিটারগেজ ও ব্রডগেজ ডিজেল লোকোমোটিভ রক্ষণাবেক্ষণ ও ভারী সংস্কারের কাজ করা হয়। কারখানাটি তখন থেকেই স্বল্প জনবল দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ এটি একটি সর্ব বৃহৎ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা। এ কারখানায় সফলতার সহিত সম্পন্ন করা হয়েছে আমিরিকা থেকে আমদানিকৃত অত্যাধুনিক রেল ইঞ্জিনের কমিশনিং ওয়ার্ক। সেই সাথে স্বল্প জনবল নিয়েও নিয়মিত আউট টার্নের নির্ধারিত লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে সফলতা দেখিয়ে চলেছে এই কারখানা কর্তৃপক্ষ। এখানে দুর্ঘটনাজনিত ইঞ্জিন মেরামত করা হয়। তাছাড়া এ কারখানায় ১১ টি বিভাগের জন্য পদ রয়েছে ৭২৪ টি। এর বিপরীতে বর্তমান জনবল সংখ্যা ২১৩ জন। এছাড়াও প্রতি বছরে এ জনবলের মধ্যে থেকে অবসরে চলে গেলেও সেই পদটি কখনো পুরণ হয় না। ফলে বাড়তেই বসছে জনবলহীন সংকটে। কারখানার অফিস সুত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে রেলওয়ে লোকোমোটিভ কারখানা রয়েছে ২৯৪ টি। এর মধ্যে ব্রডগেজ ১০৮ টি মিটার গেজ ১৮৬ টি। এ সব কারখানায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ১৪০ টি ইঞ্জিনের মধ্যে ব্রডগেজে ৬০ টি মিটারগেজে ৮০ টি ইঞ্জিন রয়েছে। কারখানার রেলওয়ে বহরে ৬৭ বছরে ছয়টি মিটারগেজে ইঞ্জিন চালু রয়েছে। এ সব মেয়াদ উত্তীর্ণ ইঞ্জিনগুলোকে লোকোমোটিভ কারখানায় বছরের পর বছর ধরে সচল করা হচ্ছে। এতে প্রয়োজন শুধুই জনবল । ধরুন, একটি ইঞ্জিনে ৩৪ হাজারের বেশি যন্ত্রণাংশ থাকে। এ সব যন্ত্রণাংশ শিখতে বা জানতে একজন মেকানিকাল কর্মীকে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ বছর সময় লাগে। এরপর ঐ কর্মীরাই পদন্নোতি পেয়ে অনাত্র চলে যায়। অর্থাৎ একটি কর্মী তৈরি হতেও বছরের পর বছর সময় লাগে। অথচ এ কারখানা থেকে বিভিন্ন গ্রেডে কর্মী বদলি হওয়ায় লোকোমোটিভ কারখানাটিতে ক্রমেই জনবল সংকট শুধুই বাড়ছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করে কারখানার একটি সুত্র বলছে, রেলইন্জিন অত্যাধনিক মেকানিক্যাল সেকশনে ৫৫৯ টি পদের বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত জনবল রয়েছে ১৫১ জন। তাছাড়া প্রতি বছরেই এখান থেকে বিভিন্নভাবে কর্মী বদলি হওয়ায় , এ কারখানায় জনবল শুন্যতা দেখাই দিচ্ছে। চাকুরীর বয়স আনুপাতিক হারে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও অবসরে যাবে অধিকাংশ জনবল। তখনও জনবল হ্রাস পাবার কথা জানান সুত্রটি । আর একটি সুত্র নাম না প্রকাশ শর্তে বলছে, গত অর্থ বছরেরও এ কারখানা থেকে ৫০ জন কর্মকর্তা কর্মচারী অবসরে, কেউ বা পদন্নতি পেয়ে উপরের গ্রেডে চলে গেছেন। সর্বশেষ কারখানাটিতে ২০১৩ সালে খালাসি পদে ৪৮ জন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ১২৪ জন আউট সোসিং ও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে অস্থায়ী শ্রমিক ( টি এল আর) ৩০ জন জনবল দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ লোকোমোটিভ কারখানায় জনবল সংকট বাড়ছেই, এ বিষয়ে কারখানার প্রধান নির্বাহী (সিইএক্স) প্রকৌশলী মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, পার্বতীপুরের রেলওয়ে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানায় স্বল্প জনবল দিয়েই চলছে নির্ধারিত কার্যক্রম। তবে কারখানাটিকে সচল রাখতে, দ্রুত জনবলের অভাব পুরণ করতে, নিয়োগসহ, প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রণাংশ সরবরাহ ও সময় মাফিক অর্থ বরাদ্দ পেলে, প্রতি মাসেই তিনটি আউট টার্ন দেয়ার সম্ভবনার কথা জানান ।